বিশ্ব আজ ডিজিটাল বা বলা চলে অনেকাংশেই অনলাইন মুখী। দিনকে দিন আমরা ইন্টারনেটে অধিক হারে সক্রিয় হচ্ছি এবং নতুন নতুন ব্যবহার কারীর সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়েবসাইট মূলত ইন্টারনেটে আমাদের সমস্ত অনলাইন কার্যক্রমগুলো চালাতে সাহায্য করে। এটি আজকের বিশ্বে আমাদের সমাজের এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি প্রয়োজনীয় অংশ হয়ে উঠেছে৷ এই ওয়েবসাইটগুলি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে যেখানে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিংবা বাণিজ্যিক বা অন্যান্য কার্যক্রম গুলো সম্পর্কে ঘরে বসেই খুব সহজে জানতে পারি।
বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য খোঁজে, পণ্য-পরিষেবা খোঁজে, এবং বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করে। এই অবস্থায় একটি ওয়েবসাইট শুধুমাত্র একটি ডিজিটাল পরিচয় নয়, বরং ব্যবসা, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। আজকের এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো—কেন ওয়েবসাইট থাকা আবশ্যক এবং এটি কীভাবে আপনার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
যেকোন বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান থেকে শুরু করে ব্যাংকিং কিংবা মুদি দোকানের কোন প্রোডাক্ট থেকে শুরু জামা কাপড়, এই সবকিছুই একটি সাইটের মধ্যে পাওয়া সম্ভব। চলুন, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ওয়েবসাইটের গুরুত্ব বোঝার জন্য আমরা কিছু দৈনন্দিন কাজ লক্ষ্য করি।
- তথ্য আদান প্রদান করা
- অনলাইন ব্যবহার করে অধ্যয়ন
- ভিডিও দেখা
- গেম খেলা, মুভি দেখা
- একে অপরের সাথে সংযোগ হওয়া এবং কথা বলা
- ফটো দেখা এবং শেয়ার করা
- ব্লগ বা বই পড়া, কোন কিছুর জন্য সার্চ করা
- .বিল পরিশোধ করা
- সঠিক সময়ে খবর পাওয়া
- দূরবর্তী কোন স্থান সম্পর্কে জানা
- একটি ব্যক্তি বা কোন ব্যবসা সম্পর্কে জানা এবং এই প্লাটফর্মে একটি ব্যক্তিগত প্রোফাইল কিংবা জীবনবৃত্তান্ত বা কোন ব্যবসার অবস্থান তৈরি করা
সমাজ হল একটি সম্প্রদায় যেখানে আমরা বাস করি, মানুষের দল। আমরা যাই করি না কেন, তা হোক সামাজিক ক্রিয়াকলাপ বা ব্যবসা, এটি সমাজের মধ্যে থাকে এবং সমাজকেই প্রভাবিত করে। ওয়েবসাইটগুলি যখন ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং ব্যবসায়িক উভয় উদ্দেশ্যেই গুরুত্বপূর্ণ তখন তারা সামগ্রিকভাবে সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে যুগে আমাদের অনেক কার্যকালাপই অনলাইনের উপরে নির্ভর করে আছে। সেটি হতে পারে যোগাযোগ বা ক্রয়-বিক্রয় এর একটি মাধ্যম।
করোনা মহামারীই আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে, ওয়েব এবং ওয়েবসাইট আমাদের সমাজের জন্য এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। লকডাউনের দিনগুলিতে আমরা একে অপরের সাথে সংযুক্ত এবং যোগাযোগে থেকেছিলাম এবং আমাদের ব্যবসা, কাজ এবং আমাদের দৈনন্দিন কাজগুলি পরিচালনা করেছিলাম ঘর থেকে বের না হয়ে ও। এটি অবশ্যই প্রযুক্তি, এবং ওয়েবসাইট এর একটি অংশ কিন্তু ওয়েবসাইটগুলি ওয়েবের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
জুম, গুগল মিট হলো সাইট ভিত্তিক প্ল্যাটর্ফম যা ব্যবহার করে আমরা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসগুলোতে অংশগ্রহণ করেছি এবং একে অপরের সাথে ঘরে বসেই মিটিং করতে পেরেছি, পেরেছি অনেক তথ্য ও শেয়ার করতে। এ দ্বারা আমরা বুঝতে পারি, ওয়েবসাইট আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের বেশিরভাগ কাজ করতে সহায়তা করে। এটি যখন সবার জন্য এবং সমগ্র সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তখন ব্যবসার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের সমস্ত ব্যবসা সমাজেই করি, এর বাইরে নয়।
একটি ওয়েবসাইট হল একটি লাইভ এবং অ্যাক্সেসযোগ্য ওয়েব পৃষ্ঠা বা একাধিক ওয়েব পৃষ্ঠাগুলির একটি সেট যা একটি একক ডোমেন নামের অধীনে থাকে। ইন্টারনেটে কোন একটি সাইট খুঁজে পাওয়ার জন্যে সেই সাইটটির নাম জানা অবশ্যই প্রয়োজন। একটি সাইট নামকরণ এবং সাইটটিকে মনে রাখার জন্যেই ডোমেইন ব্যবহার করা হয়। ডোমেইন নাম ইন্টারনেটে ঠিকানার মতো ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ওয়েব ডিজাইনার, ডেভেলপার বা একজন ওয়েবসাইট পেশাদার একটি বা বেশ কয়েকটি ওয়েব পেজ ডিজাইন করে যা সেই ডোমেইন নামে প্রকাশিত হয় এবং সেই ডোমেইনের জন্যে একটি ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে যায়। যখন ডোমেনের সাথে ওয়েব পৃষ্ঠাগুলির সেট হোস্ট করা হয় এবং এটি তখন ইন্টারনেটে লাইভ হয়ে যায়, এবং একটি ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচিতি পায়।
কাজের ধরণ বা ক্ষেত্র বিশেষ একটি ওয়োবসাইট বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যেমনঃ কোম্পনি ওয়েবসাইট, ই-কমার্স সাইট, নিউজ সাইট বা পোর্টাল, কমিউনিটি, অর্গানাইশেন, গেমিং, ব্লগ, মুভি বা ভিডিও, সোশিয়্যাল বা ব্যাঙ্কিং ওয়েবসাইট ও হয়ে থাকে। চলুন এখন দেখে নিই, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে একটি ওয়েবসাইট কিরকম ভূমিকা পালন করে তা দেখে নিই।
আসুন প্রথমে একটি ওয়েবসাইট সম্পর্কে কিছু জিনিস জেনে নেওয়া যাক। কেন একটি ব্যবসার জন্যে একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন? একটি ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট থাকা বলতে আমরা কী বুঝি, একটি ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট থাকার উদ্দেশ্য কী৷ এটি মূলত একটি ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট বা সহজভাবে একটি ওয়েবসাইটের গুরুত্ব বুঝতে আমাদের সাহায্য করবে।
প্রতিটি ব্যবসার জন্যেই মার্কেটিং প্রয়োজন। মার্কেটিং এর অর্থই হচ্ছে বেশি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো। ডিজিটাল বিশ্বে একটি ব্যবসা কীভাবে এটি অর্জন করতে পারে? এটি শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। একটি ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট হল একমাত্র প্ল্যাটফর্ম যা নিম্নলিখিত বিষয়গুলো ঘটাতে সাহায্য করে। আমরা মিনিটের মধ্যে আমাদের শ্রোতা বা সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে এবং সংযোগ করতে পারি। অথবা এটিকে ব্যবহার করে আমাদের সম্ভাব্য গ্রাহকরা মিনিটের মধ্যে এবং দিনের যে কোনো সময় আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। তারা আপনার ব্যবসা বা কোম্পানি, এবং এর পণ্য সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে। তারা কয়েক মিনিটের মধ্যে অনলাইন থেকে খুব সহজেই অর্ডার করতে পারে।
সুতরাং, একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠার জন্যে আপনার আজ একটি ওয়েবসাইট থাকা দরকার কারণ এই পৃথিবী এখন ডিজিটাল। মানুষ ঘরে বসেই খুব সহজে সেবা পাচ্ছে। আর এই কারণেই আজকের বিশ্বে ব্যবসার জন্য একটি ওয়েবসাইট থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে মার্কেটিং ডিজিটাল ভাবেই হচ্ছে এবং এর জন্য একটি ব্যবসার একটি ওয়েবসাইট থাকা প্রয়োজন। আপনি কি জানেন যে, ওয়েবসাইটগুলো গুগল থেকে এত বেশি ট্রাফিক কেন পায়? আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিকের পরিমাণ যত বৃদ্ধি পাবে, আপনার সেল তত বৃদ্ধি পাবে, আপনার কোম্পানি ও খুব সহজেই মানুষের কাছে পরিচিত হবে।
SEO সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে খুব সহজেই মূল্যবান অর্গানিক ট্রাফিক আনা সম্ভব যা কিনা আপনার ব্যবসার মুনাফাকে খুব সহজেই বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে এর জন্যে আপনাকে অবশ্যই একজন ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ করতে হবে। প্রযুক্তি, ইন্টারনেটের উন্নতি এবং অগ্রগতির সাথে সাথে ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব বাড়ছে। বর্তমান বিশ্বে প্রায় প্রতিটি ব্যবসার জন্যেই একটি ওয়েবসাইট থাকা দরকার। প্রতিটি ব্যবসার জন্যে কেন একটি ওয়েবসাইট থাকা দরকার তা নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।
তথ্য গ্রহণ
আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় যেকোন তথ্য ঘরে বসে খুব সহজেই পেয়ে যাচ্ছি ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে। এ ব্যাপারটি সম্পূর্ণই ঘটেছে ওয়েবসাইটের জন্যে। আপনি শুধুমাত্র ওয়েবসাইট এবং ওয়েব পৃষ্ঠাগুলির মাধ্যমে সমস্ত তথ্য খুঁজে পেতে করেন। এটি হাজার হাজার, লক্ষ, লক্ষ, দরকারী তথ্যসমূহকে বৃহৎ ওয়েব পৃষ্ঠাগুলির নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটকে আবদ্ধ করে৷
পেশাগত ও ডিজিটাল পরিচয় তৈরি করে
আপনার ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের কোনো অফিস থাকতে পারে, তবে একটি ওয়েবসাইট আপনাকে বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল অফিস তৈরি করে দেয়। এটি আপনাকে ২৪/৭ পরিচিত করতে সাহায্য করে। কেউ আপনার সম্পর্কে জানতে চাইলে সরাসরি ওয়েবসাইটে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ: যদি আপনি একজন ফটোগ্রাফার হন, তাহলে আপনার পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট দেখে ক্লায়েন্টরা আপনার কাজের মান বিচার করতে পারবেন।
২৪ ঘণ্টা খোলা অফিস
ওয়েবসাইট এমন একটি মাধ্যম যা সার্বক্ষণিক খোলা থাকে। এটি গ্রাহককে যেকোনো সময় আপনার সম্পর্কে জানতে, পণ্য দেখার বা কেনার সুযোগ দেয়। আপনি হয়তো রাত ৩টায় ঘুমাচ্ছেন, কিন্তু আপনার ওয়েবসাইট তখনও কোনো গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। এভাবে আপনার বিক্রয় বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, কারণ আপনি সীমিত সময় বা লোকবলের উপর নির্ভর না করে ২৪ ঘণ্টা সেবা দিচ্ছেন।
ব্যবসায়িক আয় বৃদ্ধি
একটি ওয়েবসাইট আপনার পণ্য বা সেবা অনলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রচার করতে সাহায্য করে। Google-এর মাধ্যমে মানুষ আপনার ওয়েবসাইট খুঁজে পায়, আর SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) এর মাধ্যমে আপনি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দর্শকদের আকর্ষণ করতে পারেন।
ই-কমার্স ওয়েবসাইট থাকলে আপনি সরাসরি অনলাইন পেমেন্ট ও অর্ডার নিতে পারবেন, যা বিক্রয়কে আরও গতিশীল করে তোলে।
বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ
আপনি যদি বিদেশি মার্কেটে প্রবেশ করতে চান, তাহলে একটি পেশাদার ওয়েবসাইট আপনাকে সেই পথ করে দেবে। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও আপনি পরিচিত হতে পারবেন।
উদাহরণ: বাংলাদেশের একটি হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান তার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইউরোপ, আমেরিকা বা মধ্যপ্রাচ্যে ক্রেতা পেতে পারে।
ব্র্যান্ড মূল্য ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়
ওয়েবসাইট একটি প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করে। যখন মানুষ দেখে আপনার একটি পেশাদার ওয়েবসাইট আছে, তারা ধরে নেয় আপনি একটি সংগঠিত এবং নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। একটি সুন্দর ডিজাইন, পরিষ্কার কনটেন্ট এবং গ্রাহকের রিভিউ যুক্ত ওয়েবসাইট আপনাকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করে।
গ্রাহক বিশ্লেষণ ও তথ্য সংগ্রহ
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি Google Analytics-এর সাহায্যে জানতে পারেন—
- কে আপনার ওয়েবসাইটে আসছে
- তারা কোন পেজে বেশি সময় দিচ্ছে
- কোন পণ্য বেশি জনপ্রিয়
এই তথ্যগুলো ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কাস্টমার সার্ভিস ও ফিডব্যাক সহজ হয়
ওয়েবসাইটে FAQ, Contact Form, Live Chat ইত্যাদির মাধ্যমে আপনি গ্রাহকের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে পারেন। এ ছাড়া গ্রাহকরা ফিডব্যাক দিতে পারলে আপনি তাদের চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন আনতে পারেন।
প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার উপায়
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি সফল ব্যবসার একটি ওয়েবসাইট রয়েছে। আপনি যদি ওয়েবসাইট না রাখেন, তাহলে আপনি প্রতিযোগিতার দৌড়ে অনেক পিছিয়ে পড়বেন। বিশেষ করে যারা অনলাইনে তথ্য খুঁজে ব্যবসা বেছে নেয়, তাদের কাছে আপনি অদৃশ্য থাকবেন।
গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানঃ
আপনার গ্রাহক বা শ্রোতা বা পাঠকরা যেকোন জায়গা থেকেই আপনার ব্যবসা সম্পর্কে এবং আপনি যা বলতে চান তা অ্যাক্সেস করতে পারেন, যদি আপনি ব্যবসার জন্যে ওয়েবসাইট ব্যবহার করেন। এর একটি কারণ হলো, আপনার ওয়েবসাইটটি অনলাইনে সক্রিয় থাকে ২৪/৭,এবং বছরে ৩৬৫ দিন। আপনার সাইটের মাধ্যমেই গ্রাহক পণ্য সম্পর্কে জানতে পারবে, কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারবে, পণ্য সম্পর্কিত তথ্য পড়তে এবং কেনাকাটা করতে ও পারবে সাইট থেকে। আপনাকে মুখোমুখি না দেখে এবং আপনার অফিসে না গিয়ে আপনার গ্রাহকদের কাছে আপনি পণ্য সেল করতে পারেন।
তৃতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ যা হলো ওয়েব ডিজাইনিং এবং ডেভেলপমেন্ট প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি যেকোনো রকমের সাইট তৈরি করে আপনার গ্রাহককে সেবা দিতে পারবেন।
ওয়েবসাইটের গুরুত্ব:
একটি কোম্পানি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থাকার গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো অনলাইন জগতে পরিচয় তৈরি করা। একটি ব্যবসায়িক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি যা যা করতে পারেন।
- তথ্য প্রকাশ ও শেয়ার করা
- ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করা
- বিশেষ করে, সার্ভিস বিক্রয় করা
- আপনার শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানো
- আপনার দর্শকদের কাছে পরিবেশন করা
- আপনার দর্শকদের সাথে সংযোগ করা এবং যোগাযোগ স্থাপন করা
- আপনার দর্শকদের মধ্যে আপনার উপস্থিতি গড়ে তোলা
- আপনার ব্যবসা এবং এর পণ্য ও পরিষেবাগুলির জন্য আপনার দর্শকদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করা
- আপনার ব্যবসা, এর অফার এবং আপনার পণ্য এবং পরিষেবাগুলিকে প্রচার এবং জনপ্রিয় করে তোলা
বর্তমানে বিশ্বে ২০২৫ সালে এবং ভবিষ্যতে ও এর গুরুত্ব কেন থাকবে?
- বিশ্বে জনসংখ্যা প্রায় ৭.৫ বিলিয়ন
- বিশ্বব্যাপী প্রায় 5.1+ বিলিয়ন সক্রিয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে
- 65% জনসংখ্যা সক্রিয়ভাবে বা দৈনিক ইন্টারনেট ব্যবহার করে অ্যালেক্সার(Alexa) মতে, ইউটিউবের পরেই গুগল ইন্টারনেটে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। ফেসবুকের অবস্থান ৬ নম্বরে।
- একজন ব্যবহারকারীর দ্বারা দৈনিক 6 ঘন্টার বেশি সময় ইন্টারনেটে ব্যয় হয়।
- ইন্টারনেটে মোট 1.92 বিলিয়ন ওয়েবসাইট রয়েছে যার এর মধ্যে ওয়েবে 198.4 মিলিয়ন সক্রিয় ওয়েবসাইট রয়েছে।
- প্রতিদিন প্রায় 7 মিলিয়ন ব্লগ পোস্ট প্রকাশিত হয়
- প্রতি মিনিটে YouTube-এ ৫০০ ঘণ্টার বেশি ভিডিও আপলোড করা হয়।
উপরের সমস্ত পরিসংখ্যানগুলো ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত। আর ওয়েবসাইটকে আমরা বলতে পারি ইন্টারনেটের ভিত্তি। এই কারণে ওয়েবসাইট প্রতিটি ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং যেহেতু আমরা ইতিমধ্যেই অনলাইন যুগে আছি।
কিভাবে প্রফেশনাল ওয়েবসাইট বানাবেন সেই বিষয়ে এখন আলোচনা করবো
কেন আপনার ওয়েবসাইট প্রয়োজন?
- পণ্য বিক্রির জন্য (ই-কমার্স)?
- সেবা প্রদানের জন্য (সার্ভিস বিজনেস)?
- তথ্য জানানোর জন্য (ব্লগ/নিউজ)?
- পোর্টফোলিও বা পরিচয়ের জন্য?
বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করুন। সঠিক সিদ্ধান্ত বেছে নিন এবং পরবর্তীতে দ্বিতীয় ধাপে চলে আসুন
ডোমেইন ও হোস্টিং কিনুন
- ডোমেইন (Domain): এটি মূলত আপনার ওয়েবসাইটের নাম। (যেমন: yourbusiness.com)
- হোস্টিং (Hosting): যেখানে ওয়েবসাইটের সব তথ্য রাখা হয়।
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট প্রকিয়া
দুইভাবে আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। কোনরকম কোডিং ছাড়াই আবার কোডিং ব্যবহার করে।
- Content Management System (CMS) ব্যবহার করে (যেমন WordPress, Wix, Shopify). CMS ব্যবহার করে কোডিং ছাড়াই ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।
- Custom Code দিয়ে (HTML, CSS, JS, PHP ইত্যাদি). কাস্টম কোড ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করলে সেই ওয়েব সাইটে বেশি ফাংশন এবং ইউনিক ডিজাইন করা সম্ভব। তবে এর জন্য আপনাকে অবশ্যই কোডিং জানতে হবে। ফ্রন্ডএন্ডের জন্যে এবং ব্রাকএন্ডের জন্যে ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে কাজ করতে হবে। বেসিক হিসেবে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, পিএইচপি জানতে হবে।
একটি সাধারণ ওয়েবসাইটে যে পেজগুলো থাকা উচিত
- Homepage – (হোমপেজ)
- About us – (আমাদের সম্পর্কে)
- Our Service – (আমাদের সার্ভিস/পণ্য)
- Photo/ Video Gallery – (ফটো/ভিডিও গ্যালারি)
- Review or Testimonial – (রিভিউ বা টেস্টিমোনিয়াল)
- Contact Form – (যোগাযোগ ফর্ম / হোয়াটসঅ্যাপ বাটন)
- Blog Post (For Boosting SEO) – ব্লগ পোস্ট (SEO এর জন্যে সাহায্য করে)
কনটেন্ট রেডি করুন
- মূল পেজ গুলো ডিজাইন করুন।
- আপনার সেবা বা পণ্যের বিস্তারিত সম্পর্কে তথ্য যুক্ত করুন।
- সফলতা বা ক্লায়েন্ট ফিডব্যাক যুক্ত করুন।
- আপনার সাথে যোগাযোগ করার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো ওয়েবসাইটে এ্যাড করুন, যাতে মানুষ খুব সহজেই আপনার তথ্যগুলো পেয়ে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ওয়েবসাইট লাইভ করা ও প্রোমোশন
- ওয়েবসাইট লাইভ করার পর সেটি ফেসবুক পেজ, গুগল বিজনেস প্রোফাইল ও হোয়াটসঅ্যাপের সাথে কানেক্ট করুন।
- সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করুন।
উপরের পদ্ধতিগুলো ফলো করে খুব সহজেই আপনি আপনার নিজের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারবেন। আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য কি একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন? ওয়েবসাইট সম্পর্কিত কোন বিস্তারিত তথ্য জানতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

